মার্কেনটাইল 'ল'

 Submitted by Md Mongur Ali Shikder 


Topic: Explain unpaid seller, rights of unpaid seller, unpaid seller’s lien and termination of sellers lien,

duration of transit.


ভূমিকা: মার্কেনটাইল  ল ক্রেতা বিক্রেতার স্বার্থ এবং বিরোধ  নিরসনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অধ্যায়নের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। পণ্য বিক্রয় আইন 1930 এ 66 টি ধারা রয়েছে উক্ত আইনে আমাদের টপিকের বিষয় গুলো কাভার করে বিদায় সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো-


অপরিশোধিত বিক্রেতার সংজ্ঞা: ব্যক্তিগত মতে, অপরিশোধিত বিক্রেতা বলতে ক্রেতা কর্তৃক মূল্য প্রদত্ত হয়নি এরূপ পণ্য বিক্রেতাকে বোঝাবে।

1930 সালের পণ্য বিক্রয় আইনে ধারা 45(১) বলা হয়েছে, 

(ক) যেক্ষেত্রে বিক্রেতাকে পণ্যের পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করা হয়নি

(খ) যে ক্ষেত্রে বিনিময় বিল বা হস্তান্তরযোগ্য দলিল দ্বারা শর্তসাপেক্ষে পণ্যের মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে কিন্তু তা প্রত্যাখান করার কারণে বা অন্য কোনো কারণে শর্ত পূরণ হয়নি এক্ষেত্রে ঐ বিক্রেতাকে অপরিশোধিত বিক্রেতা হিসেবে গণ্য করা হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ যে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিক্রেতার প্রতিনিধিকেও বিক্রেতা বুঝাবে।

অপরিশোধিত বিক্রেতার অধিকার: অপরিশোধিত বিক্রেতার মুলত দুই ধরনের অধিকার রয়েছে যথা –

ক পণ্যের উপর বিক্রেতার অধিকার।

খ ক্রেতার বিরুদ্ধে বিক্রেতার অধিকার = মূল্য আদায়ের জন্য মামলা, পণ্য গ্রহণে অস্বীকৃতি জন্য ক্ষতিপূরণের মামলা, চুক্তি প্রত্যাখ্যান করার অধিকা, সুদ বা বিশেষ ক্ষতিপূরণের অধিকার।

ক পন্যের উপর অপরিশোধিত বিক্রেতার অধিকার:

1930 সালের পণ্য বিক্রয় আইনের 46 ধারায় বলা হয়েছে, একজন অপরিশোধিত বিক্রেতা পণ্যের উপর নিম্নোক্ত অধিকারগুলোকে প্রয়োগ করতে পারে-

(১) পণ্য নিজের দখলে থাকলে পণ্যের পূর্বসত্বের অধিকার।

(২) ক্রেতা দেউলিয়া হলে পণ্যের দখল ত্যাগ করা হয়ে থাকলে এবং পণ্য পরিবহন অবস্থায় থাকলে পণ্য আটকের অধিকার। (৩) পণ্য বিক্রয় আইন এর সীমাবদ্ধতা সাপেক্ষে পণ্য পুনঃবিক্রয়ের অধিকার।

অপরিশোধিত বিক্রেতার পূর্বস্বত্ব: ক্রেতা কর্তৃক  পণ্যের মূল্য পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত পণ্য বিক্রেতা অধিকারে রাখতে পারে আর এই অধিকারকে পণ্যের পূর্বস্বত্ব বলে। 1930 সালে পণ্য বিক্রয় আইন এর 47(১) ধারা তে বলা হয়েছে যে একজন অপরিশোধিত বিক্রেতা নিম্মোক্ত অবস্থায় পণ্য নিজের দখলে রাখতে পারে এবং পণ্যের পূর্ণ মূল্য না পাওয়া পর্যন্ত পণ্যের দখল ক্রেতাকে দিতে বাধ্য নয়। যথা-

ক যে ক্ষেত্রে পণ্য বাকিতে বিক্রি করা হয়নি

খ যে ক্ষেত্রে পণ্য বাকিতে বিক্রয় করা হয়েছে কিন্তু বাকি মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে

গ যে ক্ষেত্রে ক্রেতা দেউলিয়া হয়ে গেছে।

এ আইনের 47(২) ধারাতে বলা হয়েছে বিক্রেতা যদি ক্রেতার প্রতিনিধি বা গচ্ছিত গ্রহীতা হিসেবে পন্য নিজের দখলে রাখে সেক্ষেত্রে পণ্যের পূর্বস্বত্বের অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। 

এই আইনের 48 ধারাতে বলা হয়েছে বিক্রেতা যদি পণ্যের একাংশ ক্রেতার নিকট অর্পণ করে এবং পারিপার্শ্বিক দিক বিবেচনা করে এটা প্রমাণিত হয় যে বিক্রেতা তার পণ্যের পূর্বস্বত্বের অধিকারী ত্যাগ করেছে তবে সে বাকি পণ্যের ক্ষেত্রে পূর্বস্বত্বের অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।

অপরিশোধিত বিক্রেতার পূর্বস্বত্ব লোপ:1930 সালের পণ্য বিক্রয় আইনের 49(১) ধারায় বলা হয়েছে নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে একজন অপরিশোধিত বিক্রেতার পণ্যের পূর্বস্বত্ব লোপ পায়-

(ক) অপরিশোধিত বিক্রেতা যখন কোন পণ্য বিলির উপর পূর্বস্বত্বের অধিকার সংরক্ষণ না করে ক্রেতার কাছে পণ্য পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে কোন বাহক বা গচ্ছিত গ্রহীতার কাছে পণ্য অর্পণ করে, তখন পন্যের পূর্বস্বত্বের অধিকার পরিসমাপ্তি ঘটে।

(খ) ক্রেতা বা তার প্রতিনিধি যখন পণ্যের দখল প্রাপ্ত হয় তখন পূর্বস্বত্বেরর পরিসমাপ্তি ঘটে।

(গ) বিক্রেতা পূর্বস্বত্ব যখন ত্যাগ করে তখন পূর্বস্বত্ব লোপ পায়।

পণ্যের পরিবহন অবস্থা:1930 সালের পণ্য পরিবহন আইন এর 51 (১) ধারায় বলা হয়েছে যে, ক্রেতার নিকট  পণ্য পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে বাহক বা গচ্ছিত গ্রহীতার নিকট যে সময় পণ্য অর্পণ করা হয় সে সময় হতে ক্রেতা বা তার প্রতিনিধির নিকট পণ্য অর্পণ করা পর্যন্ত যে সময় উক্ত সময়ে  পণ্যের পরিবহন অবস্থা বলা হয়।

51 (২) ধারায় বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই যদি ক্রেতা বা তাহার প্রতিনিধি পন্য গ্রহণ করে তাহলে পণ্যের পরিবহন অবস্থার অবসান ঘটবে।

51(৩) নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছানোর পর ক্রেতা বা তার প্রতিনিধি যদি স্বীকার করে যে ক্রেতার পক্ষে পণ্যটি সে গ্রহণ করেছে তাহলে পণ্য পরিবহন অবস্থার পরিসমাপ্তি ঘটবে। ক্রেতা যদি অন্য কোন স্থানে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেয় সেক্ষেত্রে পরিবহন অবস্থার সমাপ্তি ঘটবে না।

51(৪) ক্রেতা যদি পণ্য প্রত্যাখ্যান করে এবং পণ্য বাহক বা গ্রহীতা পণ্যটি দখলে রেখেদেন এমনকি বিক্রেতা যদি পণ্য ফেরত নিতে অস্বীকার করেন সেক্ষেত্রেও পণ্যের পরিবহন অবস্থার পরিসমাপ্তি ঘটবে না।

51 (৫) যখন কাটা করতি ভাড়া করা জাহাজে পণ্য অর্পিত  হয় তখন জাহাজের মাস্টার পণ্যের বাহক না ক্রেতার প্রতিনিধি হিসেবে গণ্য হবে তা পারিপার্শ্বিক ঘটনার উপর ভিত্তি করে বিবেচিত হবে।

51 (৬) পন্যের বাহক বা গচ্ছিত গ্রহীতা অন্যায় ভাবে প্রতিনিধি বা ক্রেতার নিকট অর্পণ করতে অস্বীকার করে সে ক্ষেত্রে পরিবহন অবস্থার পরিসমাপ্তি ঘটে।

51(৭) যখন ক্রেতা বা তার প্রতিনিধির নিকট বিক্রেতা কর্তৃক পণ্যের একাংশ দখল অর্পণ করা হয় এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থার দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় যে বাকি অংশ দখল অর্পণের জন্য তা করেছেন সে ক্ষেত্রে বিক্রেতা পণ্য পরিবহন অবস্থায় আটক করতে পারবেন।

উপসংহার:পরিশেষে বলা যায় মার্কেনটাইল ল অধ্যায়নের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ক্রেতা এবং বিক্রেতার অধিকার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন বিরোধ নিরসনের উপায় বের করতে পণ্য বিক্রয় আইন 1930 যুক্তিযুক্ত এবং যথার্থ সমাধান ব্যক্ত করেছে অতএব আইনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

If any doubt please let me know

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন

দেওয়ানীকার্যবিধি পার্ট ২

দণ্ডবিধি পার্ট ২