সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন
Submitted by Md Mongur Ali Shikder
Topic: Make comparative study in between section 8 and 9 of S.R Act
as wel as permanent injunction and Temporary injunction.
ভূমিকা : সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন 1877 স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির বিরোধ নিরসনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
ধারা 5 অনুসারে 5 উপায়ে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার দিতে পারে এর মধ্যে 4টি আদেশমূলক আর 1টি (5 এর গ তে বর্ণিত(ধারা 6 অনুসারে) নিরোধমূলক।
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার গুলো হচ্ছে :
ধারা ৫ : (ক) কোন সম্পত্তির দখল গ্রহণ এবং তা দাবিদারকে অর্পণের মাধ্যমে। যেমন ধারা 8 থেকে 11 অধীন সম্পত্তির দখল উদ্ধারের আদেশ দিয়ে।
(খ) যা করার ব্যাপারে তার বাধ্যবাধকতা রয়েছে একটি পক্ষকে তেমন কাজ করার আদেশ প্রদানের মাধ্যমে যেমন ধারা 12,30, চুক্তির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণ বা 55 বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা আদেশ দিয়ে।
(গ) যা না করার ব্যাপারে তার বাধ্যবাধকতা রয়েছে একটি পক্ষকে তেমন কাজ হতে বিরত রাখার মাধ্যমে যেমন 54 ধারার অধীন নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে। ( ধারা 52,54,57 )
(ঘ) ক্ষতিপূরণের রায় প্রদানের মাধ্যম ছাড়া অন্য প্রকারে পক্ষসমূহের অধিকার নির্ণয় এবং ঘোষণার মাধ্যমে। যেমন 42 ধারার ঘোষণামূলক ডিক্রি দিয়ে। (31 থেকে 43)
(ঙ) একজন রিসিভার নিয়োগের মাধ্যমে। (ধারা 44)
7 ধারা অনুসারে দন্ডমূলক আইন বলবৎ করার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন প্রযোজ্য হবে না। নিম্নে টপিকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করা হলো-
সুনির্দিষ্ট স্থাবর সম্পত্তি দখল পুনরুদ্ধারের সম্পর্কে 8 ও 9 ধারার মধ্যে তুলনামূলক পাঠ :
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন 1877 এর 8 ধারায় বলা হয়েছে, স্বত্বের উপর ভিত্তি করে দখলের অধিকারী ব্যক্তি দেওয়ানী কার্যবিধির নির্ধারিত পন্থায় সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করতে পারে।
8 ধারা অনুসারে 2টি ক্ষেত্রে মামলা করতে পারে। যেমন-
১। মালিকানা স্বত্বের উপর ভিত্তি করে এবং
২। দখলি স্বত্বের উপর ভিত্তি করে।
উক্ত ধারার আদেশ বা ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা যাবে।
8 ধারার অধীন উচ্ছেদ মামলা দায়েরের তামাদির মেয়াদ 12 বৎসর দখলচ্যুত হওয়ার দিন থেকে 12 বছরের মধ্যে।(তা.আ. অনুচ্ছেদ -১৪২)।
উক্ত ধারার মূল্যের আনুপাতিক এডভোলেরাম কোর্ট ফি দিতে হয়।
9 ধারায় বলা হয়েছে, শুধুমাত্র বাদী পূর্ববর্তী দখলের উপর ভিত্তি করে মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে যদি তাকে দখলচ্যুত করা হয় আইনগত প্রন্থা ব্যতীত বা বাদীর সম্মতি ছাড়া।দখলচ্যুত ব্যক্তি বা তার দ্বারা দাবিদার কোন ব্যক্তি উক্ত ধারায় মামলা করতে পারে।যদিও এমন মামলায় অপর কোনো স্বত্ব খাড়া করা যেতে পারে। এবং স্বত্ব প্রতিষ্ঠার বা দখল পুনরুদ্ধার মোকদ্দমা দায়েরের ক্ষেত্রে উক্ত ধারা প্রতিবন্ধক হবে না।
সরকারের বিরুদ্ধে মোকাদ্দমা দায়ের করা যাবে না। তবে সরকারের বিরুদ্ধে সংবিধানের 102 অনুচ্ছেদ অনুসারে রিট করা যাবে।
উক্ত ধারার মামলায় প্রদত্ত কোন আদেশর বিরুদ্ধে আপিল বা কোন পুনবিবেচনার আবেদনের অনুমতি প্রদানকরা যাবে না কিন্তু রিভিশন করা যাবে।
তামাদির মেয়াদ : দখলচ্যুত হওয়ার দিন থেকে 6 মাসের মধ্যে। (তা.আ. অনুচ্ছেদ 3)
9 ধারায় মামলার বিষয়বস্তুর মূল্যের এডভোলেরাম কোর্ট ফি অর্ধেক দিতে হয়।
নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে : সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনে 52 থেকে 57 ধারা পর্যন্ত আলোচনা করা হয়েছে,
52 ধারায় বলা হয়েছে, আদালতের ইচ্ছাধীন ক্ষমতাবলে অস্থায়ী বা স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে নিরোদমূলক প্রতিকার মঞ্জুর করে।
(প্রধানত নিষেধাজ্ঞা দুই প্রকার যথা-
1 অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞ 53
2 স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা 54 এবং আরেকটি নিষেধাজ্ঞার উক্ত আইনে উল্লেখ আছে সেটি হচ্ছে,
3 বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা 55)
অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা: ধারা 53 বলা হয়েছে যে, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা হলো এমন নিষেধাজ্ঞা যা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অথবা আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকে। এটা মোকাদ্দমার যে কোন পর্যায়ে মঞ্জুর করা যেতে পারে। তবে এটা কিভাবে মঞ্জুর করা হবে তা দেওয়ানী কার্যবিধির 39 আদেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রধান উদ্দেশ্য পক্ষদ্বয়ের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতি অবস্থা বজায় রাখা।
চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা : অত্র আইনের 53 ধারায় বলা হয়েছে যে,যে নিষেধাজ্ঞা মোকাদ্দমা শুনানির পর মামলার গুনাগুন এর উপর ভিত্তি করে প্রদত্ত ডিক্রি দ্বারা মঞ্জুর করা হয় তাকে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বলে। চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা পরিচালিত হয় সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন দ্বারা। চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মোকাদ্দমার শুনানির পর মঞ্জুর করা হয়।
যখন চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায় : আদালত 54 ধারার অধীন বাদীর অনুকূলে বিদ্যমান কোন বাধ্যবাধকতা ভঙ্গ রোধ করার জন্য চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারে। এমন ধরনের বাধ্যবাধকতা যদি চুক্তি হতে সৃষ্ট হয়, তাহলে আদালত সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ অনুযায়ী প্রতিকার দিবে।
উদাহরণ ক,খ কে কিছু জমি ভাড়া দিয়েছে এবং সেখান থেকে বালু উত্তোলন করবে না বলে চুক্তি করে তা থেকে বিরত রাখতে ক চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রার্থনা করতে পারে।
54 ধারার অধীন পাঁচটি ক্ষেত্রে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারে আদালত। যেমন-
ক যেখানে বিবাদী বাদীর সম্পত্তির জিম্মাদার।
খ যেখানে বাদীর অধিকারে হস্তক্ষেপের কারণে যে প্রকৃত ক্ষতি হয়েছে বা হবে তা নির্ধারণের কোন মানদন্ড নেই।
গ যেখানে হস্তক্ষেপ এমন যে আর্থিক ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত প্রতিকার হবে না।
ঘ যেখানে এমন হচ্ছে প্রার্থী ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না।
ঙ যেখানে বিচারকার্য ধারার বহুত্ব নিবারণের জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা প্রয়োজন।
ব্যাখ্যা এই ধারার উদ্দেশ্য অনুযায়ী ট্রেডমার্ক সম্পত্তি বলে গণ্য হবে না।
চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা যা প্রমাণ করতে হয় : বাদীর কোন আইনগত অধিকার লংঘন যেমন-যখন বিবাদী বাদী সম্পত্তির অধিকার ভোগ দখলের অধিকার হস্তক্ষেপ করে বা হস্তক্ষেপ করার হুমকি প্রদান করে তখন আদালত স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারে।
বাদীর অনুকূলে কোন বাধ্যবাধকতা : শুধুমাত্র বাদীর অনুকুলের বা বাদীর ব্যক্তিগত বাধ্যবাধকতা লংঘন করা হলে সেই ক্ষেত্রে আদালত চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারে এটা সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের 2 ধারায় সংজ্ঞায়িত বাধ্যবাধকতা লংঘন হতে বিরত রাখতে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা প্রয়োজন।
দখল : সম্পত্তি ক্ষেত্রে বাধা অবশ্যই তার একচেটিয়া দখল প্রমাণ করবে যদি বাদী সম্পত্তি দখলে থাকে তাহলে শুধুমাত্র চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মোকাদ্দমা রক্ষণীয়।
তামাদির মেয়াদ: কারন উৎপত্তি হওয়ার তারিখ হতে 6 বছরের মধ্যে মামলা দায়ের করতে হবে।
বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা : অত্র আইনের 55 ধারায় বলা হয়েছে যে কোন কাজ করতে কোন ব্যক্তির যে বাধ্যবাধকতা আছে তাকে উক্ত বাধ্যবাধকতা ভঙ্গ করা হতে বিরত রাখতে যদি কোন নির্দিষ্ট কাজ করতে বাধ্য করার প্রয়োজন হয় তখন আদালত উক্ত ব্যক্তিকে কোন কাজ করার জন্য বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা আদেশ দিতে পারে। বাধ্যতামূলক নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা বা না করা আদালতের বিবেচনা মূলক ক্ষমতা।
তামাদির মেয়াদ : 6 বছর তামাদি আইন 120 অনুচ্ছেদ।
যে সকল ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়না : সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন 1877 ধারা 56 অনুসারে 11 টি ক্ষেত্রে আদালত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করতে পারে। এবং অস্থায়ী ও স্থায়ী উভয় নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য উল্লেখ্য যে,যে 54 ধারার সকল শর্তসমূহ অত্র ধারার সাথে মিলিয়ে পড়তে হব। নিন্মে যে 11 টি ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করতে পারে তা তুলে ধরা হলো-
ক এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে বিচারাধীন কোন বিচার কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য কোন নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়না কিন্তু বিচার কার্যক্রমে পুনঃপৌনিকতা রোধ করার জন্য বিচার কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায়।
খ উর্দ্ধতন কোন আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য নিম্ন আদালত দ্বারা নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায় না এবং সমান এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত একে অপরের মোকাদ্দমা স্থগিত করার ক্ষমতা নেই।
গ কোন ব্যক্তিকে আইন প্রণয়ন বিষয়ক কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হতে বিরত রাখার জন্য চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায় না।
ঘ সরকারের কোন বিভাগের সহকারী কর্তব্য অথবা বিদেশি সরকারের কোন সার্বভৌম কাজে হস্তক্ষেপ করার জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায় না। সরকারি বিভাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করার ক্ষেত্রে আদালত অবশ্যই বিবেচনা করবে যে এটা সরকারি কাজকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করবে কিনা।
ঙ কোন ফৌজদারী কার্যধারা স্থগিত করার জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করবে না।
চ যে চুক্তির কার্যসম্পাদন সুনির্দিষ্টভাবে বলবৎ করা যায় না এরূপ কোন চুক্তি ভঙ্গ নিরোধের উদ্দেশ্যে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করবে না।
ছ উৎপাতের অজুহাতে এমন কোন কাজ প্রতিরোধ করার জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যাবে না যা যুক্তিসঙ্গতভাবে সুস্পষ্ট নয় যে তা উৎপাতের পর্যায়ে পড়বে।
জ একটি ক্রমাগত লংঘন রোধ করার জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যাবে না যাতে বাদীর মৌনসম্মতি আছে।
ঝ ট্রাস্ট ভঙ্গের মোকাদ্দমা ব্যতীত অন্য কোন সাধারন কার্যক্রমের মাধ্যমে যদি সমপরিমাণ ফলপ্রসূ প্রতিকার নিশ্চিত ভাবে পাওয়া যায় সেক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা যায় না।
ঞ যখন আবেদনকারী বা তার প্রতিনিধির আচরণ এমন হয় যে তাকে আদালতের সাহায্য হতে বঞ্চিত করে সে ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করবে না।
ট যে ক্ষেত্রে মোকাদ্দমার বিষয়বস্তুতে বাদীর কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ থাকেনা।
নেতিবাচক চুক্তি প্রতিপালনের জন্য নিষেধাজ্ঞা : অত্র আইনের 57 ধারায় বলা হয়েছে যে, নেতিবাচক চুক্তি প্রতিপালনের জন্য নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারে আর এটি হচ্ছে 56 চ অনুচ্ছেদের একটি ব্যতিক্রম।
এই ধারার শর্ত সমূহ -
57 ধারার অপরিহার্য উপাদান গুলো হল এই যে, চুক্তিতে অবশ্যই দুটি সম্মতি থাকতে হবে-
1 কোনো কার্যকরার ইতিবাচক সম্মতি এবং
2 কোন কার্য না করার ব্যক্ত এবং অব্যক্ত না-সূচক সম্মতি।
3 আবেদনকারী চুক্তিতে তার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে প্রতিপালন করেছে।
এক্ষেত্রে আদালত হ্যাঁ-সূচক সম্মতির সুনির্দিষ্ট বলবৎকরণে বাধ্য করতে না পারলেও না-সূচক সম্মতি পালনে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করতে পারবে।
উপসংহার : সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন 1877 একটি সময়োপযোগী যুক্তিযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ আইন যা সত্যের মালিকানা সেইসাথে দখলিস্বত্ব কে এবং দখল পুনরুদ্ধার এর ক্ষেত্রেও তার অধিকার সংরক্ষণ করে আরো চুক্তি সম্পাদনে বাধ্য করণ, দলিল সংশোধন, দলিল বাতিল প্রভৃতি সুনির্দিষ্ট প্রতিকার সমূহকে সুনিশ্চিত করে তাই আইনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য।
ভাল
উত্তরমুছুনফলপ্রসূ
উত্তরমুছুনভাল
উত্তরমুছুনWell done
উত্তরমুছুন