ফৌজদারী কার্যবিধি পার্ট ১
Submitted by Md.Mongur Ali Shikder
Topic: Critically analysis applicability and non applicability of Cr.P.C and structure of subordinate criminal courts with jurisdiction and procedure of arrest by the police and when such arrest can be made without warrant.
ভুমিকা: ফৌজদারি কার্যবিধি 1898 একটি পদ্ধতিগত আইন বলা যায় যেহেতু এতে 95% পদ্ধতিগত বিষয়ে আলোচনা করা হয়, উক্ত আইনে 565 ধারা রয়েছে অত্র আইনের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি প্রয়োগ এরিয়া, বিচারিক আদালতের এখতিয়ার, এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সন্দেহভাজন এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া, মামলার চলমান প্রক্রিয়া, রায়, আপিল, রিভিউ এবং রিভিশন, দন্ড কার্যকর করার পদ্ধতি ইত্যাদি ফলে অত্র আইন অধ্যায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। টপিকের সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো-
ফৌজদারি আইনের প্রয়োগ ক্ষেত্র : ফৌজদারী কার্যবিধি 1898 এর ১ (২) ধারায় বলা হয়েছে যে, ইহা বাংলাদেশের সর্বত্র প্রযোজ্য হবে তবে বিপরীত কোন সুস্পষ্ট বিধান না থাকলে ইহা বর্তমানে বলবৎ কোন বিশেষ অথবা স্থানীয় আইন,কোন বিশেষ এখতিয়ার অথবা ক্ষমতা, অথবা বর্তমানে বলবৎ অন্য কোন আইন দ্বারা নির্ধারিত কোন বিশেষ বিধি লংঘন করিবে না।
ফৌজদারি আদালতের শ্রেণীবিভাগ: অত্র আইনের
6(১) ধারায় বলা হয়েছে সুপ্রীমকোর্ট এবং বিধি বহির্ভূত কিন্তু বর্তমানে বলবৎ অন্য কোন আইন দ্বারা গঠিত আদালত ব্যতীত বাংলাদেশে প্রথমত দুই শ্রেনীর ফৌজদারি আদালত থাকবে যথা-
ক দায়রা আদালত খ ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
(২) ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আবার দুই শ্রেণীর যাথা-
ক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
(৩) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট 4 শ্রেণীর যথা-
ক চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এবং চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রে
খ প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট যা মেট্রোপলিটন এরিয়ায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট
গ দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট
ঘ তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট।
ব্যাখ্যা উল্লেখিত sub-section এর ক্ষেত্রে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর সাথে অ্যাডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এর সাথে অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অন্তর্ভুক্ত হবে।
ফৌজদারি আদালতের এখতিয়ার: অত্র আইনের 29খ ধারায় বলা হয়েছে কোন ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের অপরাধ ব্যতীত অন্য কোনো অপরাধ করলে এবং আদালতে হাজির হওয়ার সময় উক্ত ব্যক্তির বয়স 15 বছরের কম হলে উক্ত অপরাধের বিচার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অথবা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট করতে পারবেন অথবা সরকার কর্তৃক বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ম্যাজিস্ট্রেট এরূপ যুব অপরাধীদের বিচার করবেন।
ধারা 29গ (১) বলা হয়েছে 29 ধারায় যাই থাকুক না কেন সরকার হাইকোর্ট বিভাগের সাথে পরামর্শক্রমে
(ক) চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা অ্যাডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত নয় এরূপ যে কোন অপরাধের বিচারিক ক্ষমতা প্রদান করতে পারবেন।
(খ) মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট বা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটদের 10 বছরের অধিক নয় এরূপ যেকোনো দন্ডনীয় অপরাধের বিচাররিক ক্ষমতা অর্পণ করতে পারবেন।
অত্র আইনের 31 (১) (এই উপধারাটি কেবল সেকশনের পূর্ণতার জন্য লিপিবদ্ধ করা হইল) ধারায় বলা হয়েছে হাইকোর্ট বিভাগ আইন অনুমোদিত যে কোন দন্ড প্রদান করতে পারেন।
(২) দায়রা জজ এবং অতিরিক্ত দায়রা জজ আইনে অনুমোদিত যেকোনো দণ্ড প্রদান করতে পারেন তবে মৃত্যুদণ্ড আজ্ঞা প্রদান করার ক্ষেত্রে হাইকোর্ট ডিভিশনের অনুমতি সাপেক্ষে প্রদান করতে পারবে।
(৩) যুগ্ন দায়রা জজ 10 বছরের অধিক নয় এরূপ যেকোনো দণ্ড প্রদান করতে পারবেন।
32 (১) ধারায় বলা হয়েছে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নিম্ন বর্ণিত দন্ড সমূহ প্রদান করতে পারে
(ক) প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট 5 বছরের কারাদণ্ড 10 হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করতে পারেন।
(খ) দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট 3 বছরের কারাদণ্ড 5000 টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করতে পারেন।
(গ) তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট দুই বছরের কারাদণ্ড 2000 টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করতে পারেন।
পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তারের বিধান: অত্র আইন 46 (১) ধারায় বলা হয়েছে কোন পুলিশ অফিসার অথবা গ্রেফতারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি কথা বা কাজ দ্বারা আত্মসমর্পণ না করিলে আসামির দেহ স্পর্শ বা গ্রেফতার করবে।
(২) অভিযুক্ত ব্যক্তি গ্রেফতার এড়াতে চেষ্টা করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা পুলিশ অফিসার প্রতিরোধ করতে পারবেন।
(৩) গ্রেফতারের প্রচেষ্টায় এরূপ ক্ষমতা দেওয়া হয়নি যে মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের অভিযুক্ত ব্যতীত এরূপ ব্যক্তির মৃত্যু ঘটানো যাবে।
47 ধারায় বলা হয়েছে গ্রেপ্তারে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি যদি এর অবিশ্বাস করার কারন থাকে যেকোনো যাকে গ্রেফতার করা হবে সে কোন স্থানে প্রবেশ করেছে তবে গ্রেফতারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা পুলিশ অফিসারের দাবি ক্রমে উক্ত স্থানের ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি প্রবেশর এবং তল্লাশির যুক্তিসংগত সুযোগ সুবিধা দিবেন।
48 ধারায় বলা হয়েছে গ্রেপ্তারকারী পুলিশ অফিসার যদি মনে করেন যে স্থানে বা গৃহে অভিযুক্ত প্রবেশ করেছে তার দরজা বা জানালা ভেঙ্গে প্রবেশ না করিলে অভিযুক্ত পালিয়ে যাবে সেক্ষেত্রে অফিসার দরজা বা জানালা ভেঙ্গে প্রবেশ করতে পারবে। অন্দরমহলের দরজা ভাঙ্গা প্রসঙ্গ পলায়নকারী ব্যক্তি যদি অন্দরমহলে আজকে বলে গ্রেফতার করে পুলিশ কর্মকর্তা মনে করেন আর কামরাটি কোন স্ত্রীলোকের দখলে হয় তিনি পর্দানশীন হলে পুলিশ অফিসার অবাধে স্ত্রীলোকটির চলে যেতে বলবেন অতঃপর তিনি কামরা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করতে পারবেন।
49 ধারাতে বলা হয়েছে কোনো পুলিশ অফিসার গ্রেফতার করতে গিয়ে কোনো গৃহের ভিতরে আটকা পড়লে সে ক্ষেত্রে গৃহের দরজা জানালা ভেঙ্গে বের হতে পারবেন।
50 ধারাতে বলা হয়েছে পলায়ন প্রতিরোধে যতটুকু প্রয়োজন তদপেক্ষা অধিক বাধা প্রদান করা যাবে না।
বিনা পরোয়ানায় পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতারের ক্ষেত্র: অত্র আইনের 54 (১)ধারায় বলা হয়েছে যেকোনো পুলিশ অফিসার ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ বা গ্রেফতারি পরোয়ানা ব্যতীত নিম্নলিখিত ব্যক্তিগণকে গ্রেফতার করতে পারবেন।
১ম: আমলযোগ্য অপরাধের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি অথবা এবং যার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে অথবা যুক্তিসংগত খবর পাওয়া গেছে অথবা যুক্তিসঙ্গত সন্দেহ রয়েছে।
২য়: যার নিকট আইন সঙ্গত কারণ ব্যতীত ঘর বাংলার সরঞ্জাম রয়েছে।
৩য়: অত্র আইনে অথবা সরকারের আদেশ দ্বারা যাকে অপরাধী ঘোষণা করা হয়েছে।
৪র্থ: চোরাই বলে সন্দেহ করা যেতে পারে এরূপ মাল তার নিকট রয়েছে যুক্তিসঙ্গত সন্দেহে।
৫ম: পুলিশের কাজে বাধাদানকারীকে অথবা যে ব্যক্তি পুলিশের আইন সংগত হেফাজত হতে পলায়ন করেছে অথবা পলায়নের চেষ্টা করেছে।
৬ষ্ঠ: বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী হতে পলায়ন করেছে বলে যাকে যুক্তিসঙ্গতভাবে সন্দেহ করা যেতে পারে।
৭ম: বাংলাদেশের ভিতরে যে কার্য করলে অপরাধ হতো সে কার্য বাংলাদেশের বাইরে সংঘটিত হওয়ার সাথে জড়িত অথবা জড়িত সন্দেহে অথবা 1881 সালের পলাতক আসামি আইনে অথবা অন্য কোনভাবে আটক থাকতে বাধ্য ব্যক্তিকে।
৮ম: জামিনে মুক্তি প্রাপ্ত কোনো আসামি অত্র আইনের 565(৩) ধারারনিয়ম লংঘন করে।( জামিনের সময় প্রদত্ত বাসস্থান পরিবর্তন সংক্রান্ত শর্ত লংঘন।
৯ম: যাকে গ্রেফতারের জন্য অন্য কোনো পুলিশ অফিসার কর্তৃক অনুরোধ করা হয়েছে সে ক্ষেত্রে বিনা পরোয়ানায় উক্ত গ্রেফতার করতে পারবে।
উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে ফৌজদারী কার্যবিধি 1898 পদ্ধতিগত আইন যা অধ্যায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
অসাধারণ
উত্তরমুছুন